কালপুরুষ নক্ষত্র মণ্ডলের ছবি।
কালপুরুষের বর্ণনা
কালপুরুষ তারামণ্ডলের বর্তমান আকৃতি আজ থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ বছর পূর্বে গঠিত হয়েছিলো। পৃথিবীর সাপেক্ষে এর তারাগুলোর আপেক্ষিক গতি কম হওয়ার কারণে আজ থেকে আরও ১০/২০ লক্ষ বছর পর্যন্ত কালপুরুষ তারামণ্ডলকে রাতের আকাশে দেখা যাবে। অর্থাৎ এটিই দৃশ্যমান মণ্ডলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় পর্যবেক্ষণযোগ্য থাকবে। আরও একটি সুবিধা হল এই মণ্ডলের আবির্ভাব মানব সভ্যতার সমসাময়িক কালে হয়েছে।
সুমেরীয়রা কালপুরুষ তারামণ্ডলকে একটি জাহাজ হিসেবে কল্পনা করত। প্রাচীন চীনে এটি ছিল রাশিচক্রের ২৮ টি রাশির একটি যার প্রতীক ছিল Xiu (宿)। এই রাশিটি সেখানে শেন নামে পরিচিত ছিল যার অর্থ তিন। কালপুরুষের কোমরবন্ধের তিনটি তারা দেখেই তারা এই নামকরণ করেছিল।প্রাচীন মিশরে এই মণ্ডলের তারাগুলো মৃত্যু এবং পাতালপুরীর দেবী অসিরিসের সাথে সম্পর্কিত ছিল। বলা হয়ে থাকে যে গিজা পিরামিড কমপ্লেক্স এই কালপুরুষের কোমরবন্ধের তিনটি তারার খ-মানচিত্র অনুসারে তৈরি করা হয়েছে।
এই কমপ্লেক্সের মধ্যে রয়েছে গিজার গ্রেট পিরামিড, খফ্রুর পিরামিড এবং মেঙ্কাউ-রার পিরামিড।কালপুরুষের কোমরবন্ধ এবং তরবারি নিয়ে প্রাচীন এবং আধুনিক অনেক সাহিত্য রচিত হয়েছে। বর্তমানকালেও যুক্তরাষ্ট্রের ২৭ পদাতিক ডিভিশনের কর্মকর্তা ও সৈন্যদের কাঁধের প্রতীক হিসেবে কালপুরুষের কোমরবন্ধ এবং তরবারি ব্যবহৃত হয়। এর একটি কারণ হতে পারে এই ডিভিশনের প্রথম সেনাপতি ছিলেন জন এফ অরিয়ান।
আরও পড়ুন: অন্তহীন ব্ল্যাক হোলে মিশছে ছায়াপথ, অভূত ছবি তুলল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ
কালপুরুষ নক্ষত্র মন্ডল
কালপুরুষ আকাশের সবচেয়ে পরিচিত তারামন্ডল হিসেবে গণ্য হতে পারে। এই মন্ডলটি খুব সহজেই চিহ্নিত করা যায়।শিকারী নামে সুপরিচিত এই মন্ডলের উল্লেখযোগ্য তারাগুলো মহাকাশের বিষুবীয় অঞ্চলে অবস্থান করায় পৃথিবীর সব অঞ্চল থেকে একে দেখা যায়। উত্তর গোলার্ধে শীত শেষ সময় হতে বসন্তের প্রাথমিক সময় পর্যন্ত কালপুরুষ মন্ডলটি দেখা যায়।
আরও পড়ুন: কী সংকেত ভেসে আসছে ৯০০ কোটি আলোকবর্ষ দূর থেকে? রেডিও সিগন্যালে কি পেলেন বিজ্ঞানীরা