জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ কিভাবে কাজ করবে?

    জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ কিভাবে কাজ করবে
    জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ 


    অ্যাস্ট্রোনমি জগতে একটা এক্সাইটিং জিনিস হতে চলেছেন জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ লঞ্চের জন্য রেডি হয়ে গেছে । এটার ১০ বিলিয়ন ডলারের হাইটেক ইন্সট্রুমেন্ট । যেটা মহাকাশে নতুন নতুন জগতকে খুজবে এবং আমাদের গ্যালাক্সিতে জীবনের অস্তিত্ব আছে কিনা সেটাও জানার চেষ্টা করবে । ভবিষ্যতে হয়তো আমরা আমাদের সবথেকে বড় প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেলেও পেতে পারি এই ব্রম্ভান্ডের । আমরা কি একা? এই ইন্সট্রুমেন্ট কিভাবে আমাদের চিন্তা ভাবনাকে পাল্টে দিতে পারে যেভাবে আমরা আমাদের ইউনিভার্স কে দেখি । এমনকি এটা আমাদের সেই সব জিনিস দেখাতে পারে যেটা আগে কখনও আমরা দেখিনি ।

    জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের নামকরণ

    নাসার দ্বিতীয় অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের নাম অনুযায়ী এর নামকরণ করা হয়েছে। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ যাকে ওয়েব অথবা J.W. S.T বলা হয় । এটা ইতিহাসের সব থেকে বড় স্পেস টেলিস্কোপ । এমনকি এটাকে ইনফারেট ওয়েব লেনকে ট্র্যাক করার জন্য অপটিমাইজ করা হয়েছে ।হাবাল স্পেস টেলিস্কোপ যেটা করতে পারেন না সেটা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ করতে পারবে । হাবাল স্পেস টেলিস্কোপ অ্যাস্ট্রোনমি জগতে একটা রেভিলশন এনে দিয়েছিল ।এবং আমাদের সামনে অনেক নতুন প্রশ্ন তুলে ধরেছে যার উত্তর গুলোকে খোঁজার জন্য জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ বানানো হয়েছে ।

    জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ও হাবাল টেলিস্কোপ

    জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ হাবাল টেলিস্কোপের থেকে প্রায় ১০০ গুণ শক্তিশালী ।তার সাথে এটা অনেক বড় ওয়েব লেনকে কভার করতে পারবে এবং এর সেন্সিটিভি অনেক অনেক বেশি। এ কারণে অনেকে বিজ্ঞানী এটাকে টাইম মেশিনো বলছে । কারণ লং ওয়েব লে্ন কভারেস কাজের জন্য মহাকাশে অতীত পর্যন্ত দেখতে পারবে । যে সমস্ত গ্যালাক্সিগুলো ও নক্ষত্রগুলো অনেক অনেক বছর আগে তৈরি হয়েছিল । আর যাদের আলো এখনো আমাদের পৃথিবীতে আসছে । হয়তো সেগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে কিন্তু জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ সে গুলোকে দেখতে পারবে । এর সবথেকে ইনপন্টেন কমপেন্টন গুলোর মধ্যে একটা হল এর মেএরা । যা ডায়মিটার হাবালের মেএরা ডায়মিটার থেকে প্রায় ২.৭ গুন বড় । আর যদি  এরিয়া দিক থেকে দেখতে হয় তবে প্রায় ৬ গুন বড় ।

    জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ কি দিয়ে তৈরি

    একে তৈরি করা হয়েছে ব্যরেলিয়াম দিয়ে । যার এসটেন টু রেটরেসিও অনেক বেশি এছাড়াও ব্যরেলিয়াম উপরে সোনার পলেট দেওয়া আছে ।যাতে ইনফারেট ইনপিটিমের জন্য এই মিনারটি কে অপটিমাইজ করা যায় । সম্পূর্ণরূপে মিনারটি উপরে সোনার কোটিং করতে ৪৮.২ গ্রাম সোনা লেগেছে । অর্থাৎ  সোনার কোডিং টা খুবই পাতলা । হাবাল স্পেস টেলিস্কোপ পৃথিবীর চারিদিকে অরবিট করে কিন্ত জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ কে পৃথিবী থেকে অনেক দূর সেট করা হবে ।যাতে অতিরিক্ত ঠান্ডায় ইনভারমেন্টে একে রাখা যায় । J.W. S.T কে নিয়ার ইনফারেট ও ম্যাত ইনফারেট ওয়েব লেন অবজাফ করা জন্য অপটিমাইজ করা হয়েছে ।যাকে আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না । আর এর জন্য এই টেলিস্কোপের যে অফটিস আছে সেটাকে একেবারে ঠান্ডা হতে হবে ।

    এর প্রায়মারি মিনার কে তৈরি করা হয়েছে ১৮ টা হিকছালগন মিনার দিয়ে । এবং উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ৬.৫ মিটার লম্বা । আর এই মিনারে ক্ষেত্রফল ২৫ কয়ার  থেকে একটু বেশি ।তবে টেলিস্কোপের সবথেকে বড় যেটা কম্পনটা আছে সেটা হল এর সানছিল ।যাকে প্রাইমারী মিনার বা তার সঙ্গে লাগানো টাওয়ার টা কে প্রটেক্ট করার জন্য তৈরি করা হয়েছে ।এই টাওয়ার এর মধ্যে আছে সেকেন্ডারি মিনার । আর এটাকে ব্যরেলিয়াম দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এবং সোনার কোটিং করা আছে ।

    তবে এর ডিজাইন এর সবথেকে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল এটা ওপেন ।হাবাল স্পেস টেলিস্কোপ কে একটা টিউবের মধ্যে তৈরি করা হয়েছিল ।কিন্তু এর ডিজাইন টা একটা ওপেন ডিজাইন এটা সূর্য থেকে অনেকটা দূরে থাকবে ।তার সাথে এর যে সানছিল আছে সেটা টেলিস্কোপকে তাপমাত্রা থেকে বাঁচাবে ।যাতে এর সেন্সরটা ইনফারেট আলো দেখার জন্য সব সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে ঠান্ডা থাকতে পারে ।

    মিশন ও টাইম

    এই স্পেস টেলিস্কোপটার মিশন টাইম মোটামুটি ১০ বছরের কাছাকাছি হবে । কারণ এই লিমিটেশন এর পেছনে কয়েকটা ফ্যাক্টর কাজ করছে । প্রথমত এর মধ্যে থাকা ফিউয়ুলের পরিমাণ যেটা এর অরবিট কে মেনটেন করতে সাহায্য করবে ।হাই টেক ইনফারেট ডিটেক গুলোকে লিকুইড হিলিয়াম দিয়ে ঠান্ডা করতে হবে । সুতরাং লিকুইড হিলিয়াম এর পরিমাণ একটা বড় ফ্যাক্টর ।অতএব ১০ বছরের বেশি যদি এই স্পেস টেলিস্কোপ কে চালাতে হয় তবে পৃথিবী থেকে মানুষকে গিয়ে এটাকে রিফিল করতে হবে । যার কোন প্ল্যান এখনো পর্যন্ত তৈরি হয়নি । তবে সমস্যা হলো এটা পৃথিবী থেকে অনেক দূরে অপারেট করবে । তাই কোন কিছু গন্ডগোল হলে একে রিপায়ার করা প্রায় অসম্ভব হবে । জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ পৃথিবী এবং সূর্য সেকেন্ড লেগারাই পয়েন্টে অপারেট করবে ।যা পৃথিবী থেকে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ।তাই একে রিফিল করা প্রায় অসম্ভব বলতে পারেন ।


    জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ও হাবাল টেলিস্কোপ
    জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ও হাবাল টেলিস্কোপ

    জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ কিভাবে কাজ করবে

    সানছিলটাকে বানানো হয়েছে কেপটন বলে একটা স্পেশাল মেটেরিয়ালের পাঁচটা লেয়ার দিয়ে । কেপটন স্পেস স্যুটে এর মধ্যেও ব্যবহার করা হয় । প্রত্যেক লেয়ার প্লাস্টিকেরে র‌্যবপের মত পাতলা আর এর ওপর অ্অ্যালুমিনিয়ামের কোটিং করা আছে । প্রত্যেকেটা লেয়ার একে অপরের সঙ্গে সেপারেট ভাবে থাকবে আর প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই উপরের লেয়ার টা থেকে নিচের লেয়ার টা বেশি ঠান্ডা থাকবে ।এটা এতটাই এফেক্টিভ যে সিলডের যে দিকটা সূর্যের দিকে থাকবে তার টেম্পারেচার ৮৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হবে । এবং যে দিকটা টেলিস্কোপ এর দিকে থাকবে  তার টেম্পারেচার -২৩৩ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড হবে । ইনফারেট স্পেকট্রামে অফিস এপ্লিকেশন করার জন্য এই টেলিস্কোপের  সেন্সরকে সবসময় ৫০kb নিচে অর্থাৎ -২২৩ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডে নিচে রাখতে হবে । তা না হলে আনওয়ান্টেড ইনফরমেশনের রেডিয়েশন জন্য এটা সঠিক ভাবে ডিটেক্ট করতে পারবে না ।

    আর এই টেম্পারেচার কে মেন্টেন করার জন্য এর মধ্যে থাকবে লিকুইড হিলিয়াম । প্রত্যেকটা জিনিসের মধ্যে থেকে ইনফারেট রেডিয়েশন বের হয় এমনকি আপনার এবং আমার মধ্যে থেকেও । আর এই ইনফারেট কে ডিটেক্ট করতে পারলে এই টেলিস্কোপটা অনেক দূরের এবং অনেক প্রাচীন অবজেক্টকে দেখতে পাবে । এই টেলিস্কোপটা এতটাই পাওয়ারফুল যে একজন প্রজেক্ট সাইন্টিস্ট বলেছে যে এর সাহায্যে আপনি চাঁদের মধ্যে থাকা একটা মৌমাছি কেউও দেখতে পারবেন । তবে মৌমাছিটাকে এক জায়গায় বসে থাকতে হবে নড়াচড়া করলে হবে না ।

    এই টেলিস্কোপটা পৃথিবীর থাকা সাইন্টিস্টদের সাথে হাইফিকুসিই রেডিটেসমিটারের সাহায্যে কমিনিট করবে ।এই কাজের জন্য নাসা কাছে আছে দীপস্পেস নেটওয়ার্ক । বিশাল বড় বড় এন্টেনা যা টেলিস্কোপ থেকে ডেটাকে রিসিভ করবে এবং বিভিন্ন সাইন্টিফিক দিয়ে পাঠিয়ে দেবে । এবার বর্তমানে  এই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ লোংচের এর জন্য তৈরি ।যখন এই টেলিস্কোপ মহাকাশের মধ্যে কুরুস করতে থাকবে তখন কিছু ক্রিটিকাল মেনুবার এই টেলিস্কোপটাকে পারফম করতে হবে । আর এর জন্য প্রায় ২৯ দিনের কঠিন যাত্রা তাকে অতিক্রম করতে হবে ।লোংচের পর সাইন্টিস্টদের কাছে এই ২৯ দিন সবথেকে ক্রিটিক্যাল টাইম হবে। তবে তাদের কাছে প্রথম কাজ হলো এটাকে স্পেস পর্যন্ত পৌঁছানোর এর বিশাল বড় সাটা একটা নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ সাইন্টিস্টদের কাছে তুলে ধরেছেন । এটা মটোও সহজ কাজ নয় ত বড় একটা টেলিস্কোপ কে মহাকাশে পাঠানোর ।

     আর সবথেকে বড় ব্যাপার হলো এটা যে রকেট এর মধ্যে করে যাবে অর্থাৎ এরিয়ান ৫ রকেট সে রকেট মধ্য ৫ মিটার থেকে চওড়া কোন জিনিসকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় ।এই কারণে টেলিস্কোপটাকে এমন ভাবে বানানো হয়েছে যাতে এটা ফোল্ডিং অবস্থায় থাকতে পারে । আর যেহেতু এটা ফোল্ডিং অবস্থায় রটের মধ্যে থাকবে তা মহাকাশে পৌঁছানোর পর এটাকে আনফুলডোও করতে হবে ।যার জন্য টেলিস্কোপ এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মেকানিক্যাল পারফরম্যান্স করতে হবে । এ টেলিস্কোপ এর মধ্যে প্রায় ৫০টা এমন কম্পন আছে যে গুলো স্পেস গিয়ে খুলবে ।যার জন্য প্রায় ১৭৮ রিলিস মেকানিজম পারফর্ম করতে হবে । আর মেকানিজম এর মধ্যে একটাও যদি গন্ডগোল হয়ে যায় তবে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে । এবার নিশ্চয়ই আপনি বুঝতে পারছেন যে এটা এত ক্রিটিকাল কেন । এত কঠিন মিশন এখনো পর্যন্ত কোন স্পেস এজেন্সি এটেম্পট করেনি ।

    এই কারণে এটা ইতিহাসের সব থেকে বেশি কমপ্লিকেটেড স্পেস অ্যাক্টিভিটি হতে চলেছে । লোংচন হওয়ার প্রায় ৫ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত এর প্রত্যেকটা ইন্সট্রুমেন্টের ক্যালিব্রেশন চলবে ।ওই ইন্সট্রুমেন্ট গুলোর মধ্যে লিকুয়ুট হিলিয়াম ক্রারাই কুলার ও রয়েছে । তারপর এটা আমাদের সোলার সিস্টেমের মধ্যে বিভিন্ন গ্রহ এবং উপগ্রহ কে ট্র্যাক করার চেষ্টা করবেন । সমস্ত টেস্ট গুলো কমপ্লিট হয়ে যাবার পর এটাকে কমিশনের ডিক্লেয়ার করে দেওয়া হবে । এবং তারপর হয়তো হাবালসে এর মত এটা আবার আমাদের আশ্চর্য করা শুরু করবে । সবকিছু যদি ঠিকঠাক থাকে তবে আমরা সবাই আবার এমন কিছু দেখতে চলেছি যেটা অতীতে আগে আমরা কখনো এক্সপেরিয়েন্স করিনি । ২২ ডিসেম্বর ২০২১ শের পর আমরা অপেক্ষায় থাকব । নতুন কিছু জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে ।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    নবীনতর পূর্বতন

    যোগাযোগ ফর্ম