এবার 25 ঘণ্টায় হবে এক দিন? শত চেষ্টা করেও পৃথিবীর কাছে থাকছে না চাঁদ

    এবার 25 ঘণ্টায় হবে এক দিন? শত চেষ্টা করেও পৃথিবীর কাছে থাকছে না চাঁদ
    পৃথিবী থেকে চাঁদ ক্রমশ সরে যাচ্ছে ছবি।


    ওয়েস্টার্ন ডেটা সায়েন্স: দূরে সরে যাচ্ছে চাঁদ। এবার হয়তো আর ২৪ ঘণ্টায় এক দিন সম্পূর্ণ হবে না। ভাবছেন সে আবার কেমন কথা! সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে রাতে শুতে যাওয়া পর্যন্ত আপনি কখনও বুঝতে পারেন না। যে, দিনের দৈর্ঘ্য ক্রমাগত বাড়ছে। বোঝার কথাও নয়, সারাদিন এমনভাবে ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে কেটে যায় যে, কতক্ষণ দিন আছে সেটাই বোঝা দায় হয়ে যায়। 

    কেন 25 ঘণ্টায় হবে এক দিন

    তবে জেনে রাখুন পৃথিবীতে দিনের দৈর্ঘ্য় একটু একটু করে বেড়েই চলেছে। অর্থাৎ এমনটা ধরা যেতেই পারে যে, দিনের দৈর্ঘ্য় ২৪ ঘণ্টার জায়গায় ২৫ ঘণ্টা হতে হয়তো বেশি দিন বাকি নেই। চাইলে আপনি একবার খেয়াল করে দেখতেই পারেন ।যে, কতক্ষণ দিন থাকছে তবে তা ঘড়ি দেখে বোঝা সম্ভব নয়। তবে বিজ্ঞানীরা কিন্তু তাঁদের গবেষণা জারি রেখেছিলেন। আর তার ফলাফল সামনে আসতেই তাঁরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। 

    বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন যে, লক্ষ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীতে দিনের দৈর্ঘ্য ছিল ১৩ ঘণ্টারও কম। কিন্তু বর্তমানে তা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। আর এর কারণ হল চাঁদ । ধীরে ধীরে চাঁদ আমাদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়্যাল হলওয়ের ভূ পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ডেভিড ওয়ালথাম বলেন যে,এই সবই জোয়ার ভাটার কারণে হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন যে, পৃথিবীর গড় দিনের দৈর্ঘ্য প্রতি শতাব্দীতে প্রায় ১.০৯ মিলিসেকেন্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

    বিজ্ঞানীরা কেন শত চেষ্টা করেও পৃথিবীর কাছে চাঁদকে রাখতে পারছে না

    পৃথিবীর ইতিহাসের প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর ধরে এটি হয়েছে। সৌরজগতের জন্মের পরে প্রথম ৫০০ মিলিয়ন বছর বা তার পরে চাঁদ তৈরি হয়েছিল বলে মনে করা হয়। গবেষণায় পাওয়া তথ্য প্রমাণ করে যে, চাঁদ অতীতে আজকের তুলনায় পৃথিবীর অনেক কাছাকাছি ছিল। সম্ভবত পৃথিবীতে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় দু’টি সূর্যোদয় এবং দু’টি সূর্যাস্ত ছিল। সূর্য ও চাঁদ পৃথিবীকে আকর্ষণ করে। তবে পৃথিবীর উপর সূর্য অপেক্ষা চাঁদের আকর্ষণ বল বেশি হয়। কেননা সূর্যের ভর চাঁদের ভরের চেয়ে কম হলেও সূর্যের চেয়ে পৃথিবীর অনেক কাছে অবস্থান করে চাঁদ। 

    আরও পড়ুন: এবার পৃথিবীর বুকেই চন্দ্রপৃষ্ঠের পরিবেশে, কৃত্রিম চাঁদ, তৈরি করছে চিন

    তাই চাঁদের আকর্ষণেই প্রধানত সমুদ্রের জল ফুলে ওঠে ও জোয়ার হয়। পৃথিবী ও চাঁদের ঘূর্ণনের কারণে চাঁদ পৃথিবী থেকে দূরে সরে গেলে ফুলে ওঠা জল আবার নেমে যায়। জলের এই নেমে যাওয়াকে ভাটা বলে। তবে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন যে, জোয়ারের টান চাঁদের ঘূর্ণনকে ধীর করে দেয়। তাই চাঁদ নিজের কক্ষপথের অনেক উঁচুতে উঠে যাচ্ছে। আর তাই পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছে। অ্যাপোলো মিশনের মহাকাশচারীরা নিশ্চিত করেছেন যে, চাঁদ প্রতি বছর ১.৫ ইঞ্চি বা ৩.৮ সেমি হারে দূরে সরে যাচ্ছে যার প্রভাব পড়ছে পৃথিবীর উপর। কারণ চাঁদ ক্রমশ দূরে সরে যাওয়ার ফলে পৃথিবীর ঘূর্ণন ধীর হয়ে যাচ্ছে।


    এবার 25 ঘণ্টায় হবে এক দিন শত চেষ্টা করেও পৃথিবীর কাছে থাকছে না চাঁদ 1
    চাঁদ আর পৃথিবীর কাছে থাকছে না ছবি।

    আরও পড়ুন: একটি ‘উপগ্রহ’ ধ্বংস করতে চলেছে ইসরো, কেন এমন সিদ্ধান্ত ভারতীয় মহাকাশ সংস্থার

    বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন যে, বর্তমানে চাঁদ পৃথিবী থেকে ৩,৮৪,৪০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। কিন্তু এই সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, প্রায় ৩.২ বিলিয়ন বছর আগে চাঁদ পৃথিবী থেকে মাত্র ২৭০,০০০ কিলোমিটার দূরে ছিল। বিজ্ঞানী টম ইউলেনফেল্ড বলেছেন ।চাঁদ সরে যাওয়ার ফলে দিন এবং রাতের মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্য হ্রাস পেতে পারে এবং সালোকসংশ্লেষকারী জীবের জৈব রসায়নকেও প্রভাবিত করতে পারে।বিজ্ঞানীদের গবেষণা করা উচিত যে, চাঁদের এভাবে দূরে সরে যাওয়া কোনওভাবে কমানো যায় কি না। বিশ্ববাসী গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমানোর চেষ্টা করে চলেছে নানা উপায়ে।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    নবীনতর পূর্বতন

    যোগাযোগ ফর্ম